Skip to main content

Posts

Showing posts from March, 2017

হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের বাণী ও কর্ম কি শুধু নমঃদের জন্য?-জগদীশচন্দ্র রায়

হরিচাঁদ ঠাকুর ও  গুরুচাঁদ ঠাকুরের বাণী ও কর্ম  কি শুধু নমঃদের জন্য? নাকি সমগ্র মানব জাতির প্রগতির জন্য? জগদীশচন্দ্র রায় roy.1472@gmail.com        এক সময়ের বুদ্ধের ভারতবর্ষ , বর্তমানে ব্রাহ্মণ্যবাদের ভারতবর্ষে পরিনত হয়েছে। কারণ,  ব্রাহ্মণ্যবাদের মূলনীতি দাঁড়িয়ে আছে জাত ব্যবস্থার উপর। এই জাত ব্যবস্থায় ব্রাহ্মণ সবার উপরে আর বাকীরা স্টেজ বাই স্টেজ নিচে। যেটা ব্রাহ্মণ্যরাই বানিয়েছে।     ভারতবর্ষের রাজনীতিতে বা সাহিত্য ক্ষেত্রে বা অন্য যেকোন ক্ষেত্রে যখন পারদর্শিতার উল্লেখ করতে হয়, তখন তাকে বলা হয় ‘দলিত ’ নেতা বা নেতৃ, দলিত সাহিত্যিক (যদিও দলিত শব্দটি অসাংবিধানিক।  সাংবিধানিক শব্দ তফশিলী জাতি, যেটা কেউ আর না বলে পারলে বলে না) ।   কারণ, এরকম সর্বক্ষেত্রে চলছে। অর্থাৎ আপনি যেখানেই জাবেন, জাত আপনার পিছু ছাড়বে না। আর এটা তফশিলীদের ক্ষেত্রেই বেশি প্রযোজ্য হয়। তবে ব্রাহ্মণদের ক্ষেত্রে কিন্তু সর্বভারতীয় কথা বা এই ধরণের কথা ব্যবহৃত হয়।      যে বাবা সাহেব ড. ভীমরাও আম্বেদকর এত বড় বিদ্যান হওয়া সত্বেও তাঁকে পন্ডিৎ বলা হয়না। পন্ডিৎ কে? না , ব্রাহ্মণ হলেই পন্ডিৎ। বাবা সাহেব দেশের জন্য যে সংব

দীক্ষা নাই, করিবে না তীর্থ পর্যটন । মুক্তি স্পৃহাশূন্য নাই সাধন ভজন ।।- হরিচাঁদ ঠাকুর

দীক্ষা নাই , করিবে না তীর্থ পর্যটন । মুক্তি স্পৃহাশূন্য নাই সাধন ভজন ।। (ঠাকুর শ্রী শ্রী হরিচাঁদ মানব পুরুষঃ অধ্যাত্ম পুরুষ  পৃঃ ২৮/২৯  থেকে   সংগৃহীত । লেখক- ড.প্রহ্লাদ রায়, বিষয়ঃ- শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত প্রসঙ্গে )               তীর্থভূমি মোক্ষভূমি ' র সমালোচনা করে যে প্রতিবাদী ধর্মের , সাহিত্যের ও সংস্কৃতির জন্ম হয়েছিল তা আজ নিজেদের মধ্যেই প্রকট । ওড়াকান্দি ও ঠাকুর নগর তীর্থ ভূমিতে গণ্য হয়েছে। দলে দলে নরনারী ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুরই অনুকরণকারী হয়ে উঠল। হয়ত এই কারণেই মতুয়া ধর্ম কেন্দ্রিক বাংলা সাহিত্য চর্চা ও প্রকাশনার দিক ধীরে ধীরে বন্ধের দিকে ।          অথচ প্রকৃত উদার ও প্রগতিশীল মানবতাবাদী ধর্ম  প্রচারক হরিচাঁদের মতুয়া ধর্ম ও তাঁর   গবেষণা প্রকাশনা নিরবে নিভৃতে হয়ে চলেছে মতুয়া দর্পণ প্রকাশনার মাধ্যমে ।      অথচ আশ্চর্যের বিষয় হল যে , মতুয়াধর্ম কেন্দ্রিক বাংলা সাহিত্য , কোনো বড় নাম করা প্রকাশনা  থেকে আজও প্রকাশিত হল না। অখন্ড ভারত ও পরে পূর্ব পাকিস্তানে মতুয়া ভাবাশ্রিত শিক্ষিত মানুষের সংখ্যাও যেমন কম ছিল না , তেমনি তাদের কর্মকান্ডও অনেক বেশী ছিল। হাজার কর্মকান্ড

যে যাহারে উদ্ধার করে সে তার ঈশ্বর-হরিচাঁদ ঠাকুর

আমরা জীবনের উদ্ধার কর্থা সম্পর্কে লীলামৃতে দেখতে পাই- “যে যাহারে ভক্তি করে সে তার ঈশ্বর।” -শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ নং ১ আর শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ চরিত-এ দেখতে পাই- “বিশ্ব ভরে এই নীতি দেখি পরস্পর। যে যাহারে উদ্ধার করে সে তার ঈশ্বর।।” শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ চরিত- পৃঃ ৫৭২ এখানে ঈশ্বরের ব্যাখ্যাটাকে কিন্তু গতানুগতিকতার ঊর্ধে গিয়ে বাস্তবতাকে তুলে ধরে বলা হয়েছে  যে, যে যাহাকে উদ্ধার করে সে তার ঈশ্বর। অর্থাৎ ঈশ্বর এখানে কোন অলীক কেউ নন। ঈশ্বর হচ্ছেন উদ্ধার কর্তা। আর এই উদ্ধার কর্তাকেই লোকে ভক্তি শ্রদ্ধা করেন।         তো এই নীপীড়িত বঞ্চিতদের উদ্ধার কর্তার কথা যদি বলতে হয়, তাহলে আমরা দেখতে পাই- মহামানব গৌতম বুদ্ধ, হরিচাঁদ ঠাকুর, গুরুচাঁদ ঠাকুর, মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল, বাবা  সাহেব ড. ভীম রাও আম্বেদকর, পেরিয়ার, গুরু নানক, গুরু রবিদাস, মাতা সাবিত্রিবাই ফুলে, মহাত্মা জ্যোতিরাও ফুলে ইত্যাদি। আবার বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এরকম দেখতে পাই- যেমন- মার্টিন লুথার, জন আব্রাহাম লিঙ্কন, নেলসন মেন্ডেলা ইত্যাদি। এই মহামানবেরা নিপীড়িত বঞ্চিত মানুষদের  অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তাই এই মহামান

কুকুরের উচ্ছিষ্ট প্রসাদ পেলে খাই।/ বেদ বিধি শৌচাচার নাহি মানি তাই।।-হরিচাঁদ ঠাকুর

      কুকুরের উচ্ছিষ্ট প্রসাদ পেলে খাই।   বেদ বিধি শৌচাচার নাহি মানি তাই।। -হরিচাঁদ ঠাকুর                                                                        (শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত – ১ম সংস্করণ, পৃ. ১০৪) আজ থেকে একশ বছররেরও অধিক আগে যে কথা কবি লীলামৃতে লিখেছেন, সে কথা সেই  যুগে দাঁড়িয়ে বলার সাহস দেখানো মানে মৃত্যু অনিবার্জ; সেখানে কবি তারক সরকার লিখে জানিয়ে দিলেন যে, হরিচাঁদ তাঁর আদর্শে বেদকে কুকুরের উচ্ছিষ্ট বা এটো খাবারের থেকেও  নিকৃষ্ট বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বেদ ও তার বিধানকে অস্বীকার করেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যিনি বেদকে মানেনি তাঁর উপর কোন অলৌকিকত্ব আরোপ করা কিভাবে সম্ভব? সেই গবেষণামূলক দৃষ্টি দিয়ে কি আপনারা কখনো ভেবে দেখেছেন? শুধু উপরে উপরে দেখেই যদি সেটা নিয়ে মাতামাতি করেন তাহলে সাধারণ মানুষের থেকে আপনাদের পার্থক্য কোথায়?  শিক্ষিত হওয়া এক জিনিস ,  আর জাগৃত হওয়া কিন্তু সম্পূর্ণ অন্য জিনিস । শিক্ষিত আমরা অবশ্যই  ।  যে লিখিত জিনিস পড়ে তাকে ‘লেখা’ পড়া  বলা হয় ।  আর   যে   লিখিত   বস্তুর   থেকে   তার   ভিতরের   অর্থ   বের   করে   তাকে   বুদ্ধিজীবী   বলা   হয়।  BETWEEN THE L

মতুয়াধর্মে জাতিভেদ বা নারীদের মধ্যে ভেদাভেদ করা হয় না।-জগদীশচন্দ্র রায়

মতুয়াধর্মে জাতিভেদ বা নারীদের মধ্যে ভেদাভেদ করা হয় না।     গুরুচাঁদ ঠাকুরের সামাজিক আন্দোলনে নারী শিক্ষার অগ্রগতি প্রদানের জন্য মিসেস্‌ মীড্‌ (সি. এস. মীড সাহেবের স্ত্রী Alice pappin) সক্রিয় সহযোগীতা করেন। তিনি গুরুচাঁদ ঠাকুরকে “ধর্ম পিতা” বলে সম্মোধিত করেন। তারপর মিসেস্‌ মীড্‌ জানান, “আমি আপনাকে পিতা বলেছি, তাই আমি আপনার কন্যা। কিন্তু আমিতো অন্য ধর্মের। তাই আপনি কি আমার হাতের খাবার খাবেন?”  তখন গুরুচাঁদ ঠাকুর জানান, “শুন কন্যা, গুণে ধন্যা, আমার বচন।   জাতি-ভাগ মোর ঠাঁই পাবে না কখন।।    নরাকারে ভূমন্ডলে যত জন আছে। ‘এক জাতি’ বলে মান্য পাবে মোর কাছে।। আমার পিতার ভক্ত আছে যত জন। এক জাতি বলে তারা হয়েছে গণ।। লোকাচারে তার কেহ কায়স্থ ব্রাহ্মণ। ‘মতুয়ার’ মধ্যে তাহা নাহি নিরূপণ।। নমঃশূদ্র, তেলী মালী, ব্রাহ্মণ কায়স্থ। ইস্‌লাম, বৈদ্য জাতি-রোগে সিদ্ধ-হস্ত।। মতুয়া সকলে এক, জাতি-ভেদ নাই। বিশেষতঃ কন্যা হ’লে নাহিক বালাই।। গুরুচাঁদ চরিত পৃঃ ২০০/২০১ অর্থাৎ “জাতিগত কারণে বা ধর্মীয় কারণে সে যে জাতি বা ধর্মেরই হোক না কেন, আমার কাছে তার ভেদাভেদের কোন অস্তিত্ব পাবেনা কখন।

“খাও বা না খাও ছেলে পিলে শিক্ষা দেও- গুরুচাঁদ ঠাকুর

গুরুচাঁদ ঠাকুরের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার আন্দোলন। তাই তিনি জীবনের উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়িত করার জন্য প্রথমেই ঘোষণা করেন-   “খাও বা না খাও তা’তে কোন দুঃখ নাই। ছেলে পিলে শিক্ষা দেও এই আমি চাই”।।  -গুরুচাঁদ চরিত- পৃঃ ১৪৪    ছেলে মেয়েকে দিতে শিক্ষা   প্রয়োজনে করিবে ভিক্ষা।  অর্থাৎ আপনি পেটের খুদা মিটাতে সক্ষম কি না সেতা আমার কাছে বড় প্রশ্ন নয়। বড় প্রশ্ন হচ্ছে আপনার সন্তানদেরকে শিক্ষিত করে তোলা। আর এর জন্য আপনাকে প্রয়োজনে ভিক্ষা করতে হলেও করবেন। কিন্তু সন্তানকে অশিক্ষিত করে রাখবেন না। এবার বলুন তো এই কথা কি কোন বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য? নাকি বিশ্বের সকল মানুষদের শিক্ষিত করার জন্য এই উদাত্ব আহ্বান? তিনি অশিক্ষাকে মারন ব্যধির সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন- অজ্ঞান ব্যাধিতে ভরা আছে এই দেশ। জ্ঞানের আলোকে ব্যাধি তুমি কর শেষ।। -গুরুচাঁদ চরিত- পৃঃ ১৩৭ অর্থাৎ এই অজ্ঞানতার ব্যাধিতে দেশ ভরে আছে। একমাত্র জ্ঞানের আলো দিয়েই  এক অজ্ঞানতাকে দূর করা যাবে। মানুষ সব সময় মুক্তির সন্ধান করে। গুরুচাঁদ ঠাকুর মানুষের এই মুক্তি লাভের জন্য বলেছেন- তাই বলিভাই       মুক্তি যদি চাই