গুরুচাঁদ
ঠাকুরের সামাজিক আন্দোলনে নারী শিক্ষার অগ্রগতি প্রদানের জন্য মিসেস্ মীড্ (সি. এস. মীড সাহেবের স্ত্রী Alice pappin) সক্রিয় সহযোগীতা করেন। তিনি গুরুচাঁদ ঠাকুরকে “ধর্ম পিতা” বলে সম্মোধিত
করেন। তারপর মিসেস্ মীড্ জানান, “আমি আপনাকে পিতা বলেছি, তাই আমি আপনার কন্যা।
কিন্তু আমিতো অন্য ধর্মের। তাই আপনি কি আমার হাতের খাবার খাবেন?”
তখন গুরুচাঁদ ঠাকুর
জানান,
“শুন কন্যা, গুণে ধন্যা, আমার বচন।
জাতি-ভাগ মোর ঠাঁই পাবে না কখন।।
নরাকারে
ভূমন্ডলে যত জন আছে।
‘এক জাতি’ বলে মান্য পাবে মোর
কাছে।।
আমার পিতার ভক্ত আছে যত জন।
এক জাতি বলে তারা হয়েছে গণ।।
লোকাচারে তার কেহ কায়স্থ ব্রাহ্মণ।
‘মতুয়ার’ মধ্যে তাহা নাহি নিরূপণ।।
নমঃশূদ্র, তেলী মালী, ব্রাহ্মণ কায়স্থ।
ইস্লাম, বৈদ্য জাতি-রোগে সিদ্ধ-হস্ত।।
মতুয়া সকলে এক, জাতি-ভেদ নাই।
বিশেষতঃ কন্যা হ’লে নাহিক বালাই।। গুরুচাঁদ চরিত পৃঃ ২০০/২০১
অর্থাৎ “জাতিগত কারণে বা ধর্মীয় কারণে সে যে জাতি বা
ধর্মেরই হোক না কেন, আমার কাছে তার ভেদাভেদের কোন অস্তিত্ব পাবেনা কখন। এই বিশ্বে যত লোক আছে,
সকলে আমার কাছে ‘এক জাতি’ অর্থাৎ মানব
জাতি বলে গণ্য হবে। আমার পিতা ঠাকুর হরিচাঁদের যত ভক্তরা আছেন তাদেরকে সব সময় এক
জাতি বলেই গণ্য হয়েছে; যদিও তারা লোকাচারে কেউ ব্রাহ্মণ, কায়স্থ বা অন্য জাতির
লোক। তবে এটা সত্য যে, বিভিন্ন জাতি বা ধর্মের লোকেরা নিজেদের মধ্যে জাতিভেদ
প্রথাকে প্রাধান্য দেয়। যার ফলে সমাজের মধ্যে বিভেদের সৃষ্টি হয়। যেটা একটা কঠিক
সামাজিক ব্যাধি। তবে আবার বলি, মতুয়ারা
সকলে একই জাতি। এখানে কোন ভেদাভেদ নেই। আর অন্য জাতি বা ধর্মে যেমন
নারীদেরকে মর্যাদা দেওয়া হয়না, কোন অধিকার দেওয়া
হয়না, সেক্ষেত্রে মতুয়াধর্মের নিময়ানুসারে আমার কাছে নারীরা সব মর্যাদা
পাবেন, অধিকার পাবেন। তাদেরকে কখন পৃথক দৃষ্টিতে দেখা হবেনা বরং তাদের প্রগতির
জন্য আমি আরো বেশি করে কাজ করব। যেখানে কোন রকম ভেদাভেদ বা জাতি ধর্মের পরিচয়
থাকবেনা।”
Comments
Post a Comment