Skip to main content

হরিচাঁদ ঠাকুরের পূর্ব পুরুষ কি ব্রাহ্মণ ছিলেন ? -সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস

বিষয়:- হরিচাঁদ ঠাকুরের পূর্ব পুরুষ কি ব্রাহ্মণ ছিলেন ?
মতুয়া ধর্ম এক ধর্ম বিপ্লব”- সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস পৃষ্ঠা নং-৩১/৩২ থেকে
শ্রীশ্রীহরি লীলামৃত গ্রন্থের শ্রীশ্রী হরিচাঁদের পুর্বপুরুষগণের পরিচয় অধ্যায়ে হরিচাঁদ ঠাকুরের পূর্ব পুরুষদের উল্যেখ আছে । একথা ঠিক যে, তাতে হরিচাঁদের পুর্বপুরুষগেণকে মিথিলা প্রদেসবাসী ব্রহ্মবংশের মানুষ হিসাবে উল্যেখ করা হয়েছে । কিন্তু গ্রন্থটি একটু খুটিয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়লে জানা যায় - এই বংশের মানুষ রামদাসের আগের কারুর নাম কিন্তু জানতে পারা য়ায় না । ত্রিশূলধারী রামদাস জীবনের প্রথম দিকটা নানা জায়গা ঘুরে বেড়াতেন । তার কোন স্থায়ী ঠিকানা ছিলনা ।পরে একটা সময়ে নবগঙ্গার তীরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন এবং নমঃশূদ্রদের ঘনিষ্ঠ হন ।
অর্থাৎ রামদাসের পুর্বপুরুষগণের পরিচয় অনেকটা অনুমান ভিত্তিক । জ্ঞানী গুণী মানুষ মাত্রেই ব্রাহ্মণ-এমন একটা চাপিয়ে দেওয়া ভুল ধারণা থেকে তার পুর্বপুরুষদের ব্রাহ্মণ বলা হয়ে থাকতে পারে । অথবা, যে অর্থে নমঃশূদ্রদের এই গ্রন্থে ব্রাহ্মণ হিসাবে উল্যেখ করা হয়েছে, সেই যুক্তির পরম্পরায় রামদাসকেও ব্রাহ্মণদের জ্ঞাতি বলা হয়ে থাকতে পারে । লীলামৃত গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, নমঃশূদ্ররা আসলে বৌদ্ধ ব্রাহ্মণ। বল্লাল সেন-এর চক্রান্তে তাদের জঘন্য জাতি হিসাবে চিন্হিত করা হয়েছে ।বস্তুতপক্ষে এমন একটা মত সমাজে চালু আছে ।
নমঃশুদ্র বীর্যবান, বৌদ্ধ ব্রাহ্মণ সন্তান,
বল্লালের কোপেতে জঘন্য ।
রামদাস ও তার পুর্বপুরুষগণ যে ব্রাহ্মণ ছিলেন না, তা বোঝা যায় তাদের জীবনাদর্শ ও ধর্মীয় বিশ্বাসের জায়গা থেকেই । অতীতে তো বটেই , এমনকি আজও সাধারণতঃ ব্রাহ্মণ সানুষেরা শ্রীচৈতন্য ভক্ত হন না। ত্রিশূল হাতে চলাফেরাও তাদের স্বভাব নয় । বরং সমাজের ব্রাহ্মণশ্রেনী শ্রীচেতন্যের অদর্শের পরিপন্হি । তারা মনে করেন শ্রীচেতন্যের মতবাদ ও আন্দোলনের ফলে ব্রাহ্মণরাই শ্রেষ্ঠ’, - এই ধারণায় আঘাত লাগে ।আধুনিক মত পুরীর মন্দিরের ব্রাহ্মণ পান্ডারা এই কারনেই ক্রোধাণ্বিত হয়ে শ্রীচৈতন্যকে হত্যা করেছিলেন ।
তাছাড়া নানা কথোপকথনে বোঝা যায় লক্ষ্মীপাশা গ্রামে বসবাসকালে ব্রাহ্মণদের সাথে রামদাসের ভাল সম্পর্ক ছিল না ।ব্রাহ্মণরাও কখনও তাকে স্বজাতি বলে উল্যেখ বা গ্রহন করেননি ।বরং তার মুখে সব সময় ছিল নমঃশূদ্রদের শৌ্র্য বীর্য ও গৌরবের কথা, যাতে তার নাড়ীর যোগ বুঝতে কষ্ট হয় না । 
কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন যে , পুত্র চন্দ্রমোহনের জন্য কন্যা খুঁজতে কেন তিনি ব্রাহ্মণদের ঘরে ঘেরে ঘুরলেন ? –লোক শিক্ষার জন্য ধর্মীয় গ্রন্থে এ জাতীয় কিছু কথা ও ঘটনার উল্যেখ থাকে । 
ঐ সময়কালে বাস্তবতঃ কুলীন ব্রাহ্মণরা এত বেশি সংখ্যায় বিয়ে করতেন যে, স্ত্রীর নাম ও শ্বশুর বাড়ীর ঠিকানা খাতায় লিখে রাখার প্রয়োজন হতো, নতুবা তারা মনে রাখতে পারতেন না কোথায় কোন স্ত্রী আছেন । এমন সময়কালে ব্রাহ্মণ সুপাত্রের জন্য ঘরে ঘরে কন্যা খুঁজে বেড়নোটাও অস্বাভাবিক মনে হয়। নমঃশুদ্র বলেই ব্রাহ্মণরা চন্দ্রমোহনকে কন্যাদান করেননি ।
মনে করার যথেষ্ঠ কারন আছে যে, এ কাহিনীর মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণ ও নমঃশুদ্রদের সম্পর্কের টানাপোড়েনের কাহিনী চিত্রিত হয়েছে ।ব্রাহ্মণদের চিন্তার দৈন্যতা ও চরিত্রের হীনতা প্রকাশ করা হয়েছে এর মধ্য দিয়ে । রামদাস নিজ মুখে দ্বিজদের বলেছেন-
সে সব সাধুর বংশ, সাধক পরমহংস 
নমঃশুদ্র কুলে লয় জন্ম ।
রামদাস একথার মধ্য দিয়ে নিজের বংশ পরিচয় নিজেই প্রকাশ করে দিয়েছেন । এ হেন মানুষ কন্যা খুঁজতে ব্রাহ্মণ ঘরে যাবেন, এমনটা মনে হয় না । এছাড়াও লীলামৃত গ্রন্থে লেখা হয়েছে
নীচ্ হয়ে করিব যে নীচ্-এর উদ্ধার
ফলে হরিচাঁদ ঠকুর যদি ব্রাহ্মণ হবেন, তাহলে একথা তিনি নিজ মুখে কেন ঘোষণা করবেন ! গুরুচাঁদ ঠাকুরও নিজেই নিজের জাত-পরিচয় ঘোষণা করে বলেছেন-
নমঃশুদ্র কুলে জন্ম হয়েছে আমার ।
তাই বলে আমি নহি নমোর একার ।।
তাই ঠাকুরবাড়ির বংশতালিকাতে এখনও যেভাবে মৈথিলী ব্রাহ্মণ লেখা হয় , এটা এক ধরনের দুর্বলতা, অবমাননাকর ও অসম্মানজনক । এ জিনিস পরিবর্তন করা দরকার এ পরিচয়ে স্বয়ং হরিচাঁদের সমর্থন নেই ।
Top of Form

Bottom of Form


Comments

  1. Your comments are right . That is Ramdas was not Maithili brahmin.
    One thing you told Matua Dharma. But from where you have collected Matua Dharma ? It is Garhastha Prashasta Dharma or Sukhsma Sonaton Dharma according to the great Shri Sri Harililamrita.
    Please tell this in future .
    Thanks and regards

    ReplyDelete
  2. এসব বাড়াবাড়ির জন্যই শেষ

    ReplyDelete
  3. একজন ধর্ম যাজকের বংশ পরিচয় যদি যথাযথভাবে উপস্থাপন না হয়।তাহলে তার ধর্ম প্রচার, বানি এগুলো মুল্যহীন।

    ReplyDelete
  4. সঠিক। কিছু মূর্খ পন্ডিত আছে সাধক পেলেই তাদের ব্রাহ্মন বানিয়ে দেয়।

    ReplyDelete
  5. আমার মনে হয় বর্তমানে এই ঠাকুর পরিবার টাকেই বয়কট করা।কারন তারা ফেক টাইটেল এবং পরিচয় বহনকারী।আগে তারা স্বীকার করুক মে তারা নমোশুদ্র

    ReplyDelete

Post a Comment