গুরুচাঁদ ঠাকুরের আলোয় মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল কর্তৃক শিক্ষা ও সংরক্ষণের বিস্তার- লেখক – জগদীশচন্দ্র রায়
গুরুচাঁদ ঠাকুরের আলোয় মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল কর্তৃক
শিক্ষা ও সংরক্ষণের বিস্তার-
লেখক – জগদীশচন্দ্র রায়
গুরুচাঁদ ঠাকুরের বয়স পড়ন্ত বিকাল। তখন তিনি ৭০ বছরের বৃদ্ধ। আর তারই ভাব
শিস্য যার বয়স মাত্র ২২ বছর। তখন ১৯২৬ সাল। যার শরীরে বইছে উন্মত্তো জোয়ারের ঢেউ। তখনকার
দিনে চলছিল জমিদারের অত্যাচার, বাহ্মণ্যবাদীদের ধর্মীয় ও সামাজিক
শোষণ। যার পরিণতি
স্বরূপ চরম দারিদ্র ও অশিক্ষা অন্ধকার হয়ে গ্রাস করে নিয়ে ছিল। এই সবকিছুর বিরুদ্ধে প্রতিকারের জন্য যার মনের
মধ্যে জ্বলছিল আগুন, তাঁর কন্ঠে ধ্বনিত হোল এই বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত বৃদ্ধেরই বাণী। সেই উদিয়মান যুবক ঘোষণা করলেন –
“জমিদাররা চিরদিন
প্রজাদের শোষণ করে তাদের বিলাস বৈভবের সোপান তৈরী করে চলেছে।
তাদের কাছে আবেদন নিবেদন করে কোনো লাভ হবে না। নিজেদের চেষ্টাতেই নিজেদের উন্নতির সোপান তৈরী
করতে হবে। নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থে নিমগ্ন না রেখে সমবেত প্রচেষ্টায় সমাজের উন্নতি সাধন করতে হবে। স্বার্থত্যাগ ব্যতীত
সমাজের কাজ হয় না। শিক্ষা হচ্ছে সমাজ উন্নয়নের চাবিকাঠি। নিরক্ষর ও অশিক্ষিত সমাজকে কেউ মর্যাদা দেয় না। মর্যাদা মানুষকে নিজের চেষ্টায় অর্জন করতে হয়। মর্যাদালাভের প্রথম
সোপান হল শিক্ষালাভ। সমাজ থেকে নিরক্ষরতকে দূর করতে হবে। শিক্ষালাভ
করলেই মানুষ সচেতন ও সংঘবদ্ধ হতে পারে। সংঘবদ্ধ মানুষকেই সকলে সমীহ
করে থাকে। ফলে সংঘবদ্ধ মানুষদের কেউ অত্যাচার, নিপীড়ন
ও শোষণ করতে পারে না। প্রজারা খাদ্য বস্ত্র ও অন্যান্য সম্পদ তৈরি করে। কিন্তু জমিদারদের শোষণ ও
অত্যাচারে তারা দরিদ্র
ও নিঃস্ব। শিক্ষালাভ করলে এবং সংঘবদ্ধ হলে আমরা জমিদারদের শোষণ ও অত্যাচার
থেকে মুক্তি লাভ করব”। (তথ্য সূত্রঃ- ক্যুইজ
অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ৪/৫)
১৯৩৭ সালের ৭ ফেবরুয়ারী বাখরগঞ্জ উত্তর-পূর্ব নির্বাচন কেন্দ্র থেকে স্বনামধন্য আইনজীবি ও জমিদার অশ্বিনীকুমার দত্তের ভ্রাতুস্পুত্র কংগ্রেসের প্রার্থী সরল দত্তকে যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল (১২০৬৯-১০৬১৩=) ১৮১৬ ভোটের ব্যব্ধানে বিজয়ী হয়ে আগৈলঝাড়া ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমীকে হাইস্কুলে পরিণত করেন এবং তিনি এই বিদ্যালয়ের সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। (তথ্য সূত্রঃ- ক্যুইজ অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ৯/১০)
পুলিশ বিভাগে তপশিলি পুলিশদের জন্য
আলাদা কোয়াটার্স -এর ব্যবস্থা করেন। কারণ তখকার দিনে তপশিলি পুলিশদের সাধারণ কোয়াটার্স-এ
বসে থাকতে দেওয়া হত না। যোগেন্দ্রনাথ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দীন সাহেবকে
ধরে তপশিলি পুলিশদের জন্য সাধারণ ব্যারাকের একটি অংশ বরাদ্দ করেন।
এই সময় গ্রাম অঞ্চলে জল নিকাশের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ফলে চাষীদের যথেষ্ট ক্ষয়
ক্ষতির সম্মুখীন হতে হত। তাঁর চেষ্টায় গ্রামাঞ্চলে অনেক বাঁধ তৈরি, খাল খনন এবং রাস্তা
নির্মাণ করা হয়।
তপশিলি জাতির ছাত্রদের কলকাতা শহরে থেকে পড়াশুনা করার কোনো ব্যবস্থা ছিল না।
সে জন্য তপশিলিদের জন্য তিনি দুটি ছাত্রাবাসের দাবি করেন। মুসলিম লীগের সর্থনে তপশিলি
ও মুসলমান্দের জন্য দুটি করে ছাত্রাবাস নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন লাভ করে।
তৎকালীন অর্থমন্ত্রী নলিনী রঞ্জন সরকারকে যোগেন্দ্রনাথ বলেন প্রতিটি কলেজ হোস্টেলে
কিছু সংখ্যক আসন তপশিলি ছাত্রদের জন্য সংরক্ষিত করলে, দরিদ্র ছাত্রদের সিটরেন্ট ফ্রি
করে এবং তাদের ভরণপোষণের জন্য মাসে ১৫ টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করা হলে সাধারণ ছাত্রাবাস
থেকে তপশিলি ছাত্রদের পড়াশুনা করতে কোনো অসুবিধা হবে না। অর্থমন্ত্রী যোগেন্দ্রনাথের
প্রস্তাব পুরোপুরি মেনে নিলেন। তপশিলি শ্রেণির ছাত্ররা আজ পর্যন্ত পড়াশুনার ক্ষেত্রে
যেসব সুযোগ সুবিধা পেয়েছে তার সূত্রপাত যোগেন্দ্রনাথ করেছিলেন।
তপশিলি ছাত্রদের ৭ম শ্রেণির পরিবর্তে ৪র্থ শ্রেণি থেকে বৃত্তি প্রদান, মফঃস্বল শহরের ছাত্রাবাসগুলিতে আসল সংরক্ষণ এবং উক্ত ছাত্রদের জন্য সরকারী ব্যবস্থা করা এম এল সি হিসাবে যোগেন্দ্রনাথের উল্লেখযোগ্য কাজ। (তথ্য সূত্রঃ- ক্যুইজ অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ৯/১০)
এ কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে গণতন্ত্রের আদর্শ অনুযায়ী কংগ্রেস, হিন্দু মহাসভা
ও তপশিলি বিধায়কদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠিত হলে এই মন্ত্রীসভায় যোগেন্দ্রনাথ কৃষকদের
স্বার্থে জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ করে কৃষকদের মধ্যে জমি বিলির ব্যবস্থা করেন। (তথ্য সূত্রঃ- ক্যুইজ অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ১০/১১)
এই সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদগুলি অস্থায়ী ছিল এবং তাঁরা নিয়মিত
মাসিক বেতন পেতেন না। যোগেন্দ্রনাথ শিক্ষকদের পদগুলি স্থায়ীকরণের ব্যবস্থা করেন।
(তথ্য সূত্রঃ- ক্যুইজ অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ১১)
১৯৩৯ সালে কলকাতা কর্পোরেশনে মুসলমান
ও তপশিলিদের জন্য আসন সংরক্ষণ ও পৃথক নির্বাচনের জন্য বিল আনা হয়। যোগেন্দ্রনাথ তপশিলি
প্রার্থীদের জন্য শতকরা ৫টি করে আসন সংরক্ষিত করেন। এ কাজে তাঁকে কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের
বিরোধিতা করতে হয়েছিল। (তথ্য সূত্রঃ- ক্যুইজ অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ,
পৃ ১১/১২)
১৯৪৩ সালে যোগেন্দ্রনাথ নাজিমুদ্দিন মন্ত্রীসভায় যোগদানের শর্ত স্বরূপ তপশিলিদের
জন্য দাবি আদায় করেন-
১) তপশিলিদের ৩ জন্য মন্ত্রী ও
৩ জন্য পার্লামেন্টারী সেক্রেটারী নিয়োগ করতে হবে।
২) তপশিলি ছাত্রদের শিক্ষার জন্য
বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকার রেকারিং গ্রান্ট মঞ্জুর করতে হবে।
৩) সাম্প্রদায়িক অনুপাত অনুসারে
সকল সরকারী চাকুরীতে তপশিলি প্রার্থীদের নিয়োগ করতে হবে। ‘গেজেটেড পোস্টেও সংরক্ষণ’
নীতি মানতে হবে। তপশিলি এম এস সি-রা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন যে, উক্ত দাবি সমূহ যিনি
মেনে নেবেন তাঁকেই নেতা হিসাবে সমর্থন করবেন। (তথ্য
সূত্রঃ- ক্যুইজ অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ১৪)
খাজা নাজিমুদ্দিনের আমলে তপশিলিদের জন্য সরকারী চাকরীতে সংরক্ষিত কোটা থাকলেও
কিছু কিছু বিভাগ থেকে অভিযোগ আসছিল যে, এই কোটা সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে না। তখন যোগেন্দ্রনাথ
মণ্ডল মন্ত্রীসভার মিটিং-এ এই ঘটনার উল্লেখ করেন, এবং এটাও বলেন, “যদি অন্যান্য
বিভাগে তপশিলিদের কোটা পুরণ করা না হয়, তবে এদ্রআমার বিভাগের একটি চাকরিও মুসলমান অথবা
বর্ণ হিন্দুকে দেবো না। সমস্ত চাকরি তপশিলি জাতির প্রার্থীগণকে দিয়ে অন্য বিভাগের ক্ষতি
পূরণ করব।।” তপশিলি ছাড়া অন্য কাউকেই চাকরীতে নিয়োগ করব না।”
এরূপ মন্তব্যে হামিদুল হক চৌধুরীসহ লিগের প্রভাবশালী
সদস্যগণ ক্রুদ্ধ স্বরে যোগেন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে বাক্য প্রয়োগ করতে থাকেন। তখন যোগেন্দ্রনাথও
অনুরূপ ক্রুদ্ধ কণ্ঠে বলেন-“মিঃ হামিদুল হক চৌধুরী, লালচোখ দেখাবেন না। লালচক্ষু
আমাদেরও আছে। আমি মন্ত্রীত্ব করি, চাকরি নয়, এই মন্ত্রী কারো দেওয়া দান নয়। যে সুখের
ঘর বেঁধে দিয়েছি, প্রয়োজন হলে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে সেটা ভেঙ্গে দিতে পারি।” এই
মন্তব্য শুনে খাজা নাজিমুদ্দিন তাঁকে আশ্বাস দিলেন যে, সমস্ত দপ্তরে যাতে সংরক্ষিত
কোটা পূরণ হয় তা তিনি অবশ্যই দেখবেন। (তথ্য- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ ১ম খণ্ড, লেখক-
জগদীশ্চন্দ্র মণ্ডল, পৃষ্ঠা ১১০)।
যোগেন্দ্রনাথের মন্ত্রীত্বকাল কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও ক্যাম্বেল মেডিকেল স্কুলে
সংরক্ষণ প্রথা চালু হয়। তাঁর তত্ত্বাবধানে প্রচুত তপশিলি ছাত্র-ছাত্রী মেডিকেন কেলেজে
ও মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হয়ে পরবর্তিকালে চিকিৎসক সিসাবে জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছিলেন।
(তথ্য সূত্রঃ- ক্যুইজ অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ১৬)
যোগেন্দ্রনাথের উদ্যোগে কলকাতা শহরে কলেজ ও উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে পাঠরত তপশিলি
ছাত্রদের জন্য ‘উদয়ন ছাত্রাবাস’ এবং ওয়েলিংটন স্ট্রীটে ‘ভারতী ভবন’ ৭৬
নং চিত্তরঞ্জন এভিনিউতে প্রতিষ্ঠিত হয়।
নাজিমুদ্দিন মন্ত্রীসভা গঠিত হবার পর
একদিন মন্ত্রীমণ্ডলীর সভায় একজন মন্ত্রী কলকাতায় মুসলিম ছাত্রদের দজন্য দুটি হোস্টেল
করার প্রস্তাব তোলেন। সঙ্গে সঙ্গে যোগেন্দ্রনাথও প্রস্তাব তোলেন যে তপশিলি ছাত্রদের
কলকাতা শহরে লজিং বা থাকার মত জায়গা পাবার সুযোগ নেই। উচ্চবর্ণের হিন্দুরা তপশিলিদের
ঘর ভাড়া দেয় না। (সেই সময় দেওয়া হতো না)। যোগেন্দ্রনাথের এই প্রস্তাবকে কেউই অস্বীকার
করতে পারলেন না। ফলে একই সঙ্গে মন্ত্রীসভায় প্রস্থাব গৃহীত হল যে, মুসলিম ছাত্রদের
জন্য ২টি এবং তপশিলি ছাত্রদের জন্য ২টি হোস্টেল স্থাপন করা হবে। (তথ্য
সূত্রঃ- ক্যুইজ অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ১৭)
১৯৪৪ সালে নারী শিক্ষার উপর যোগেন্দ্রনাথ জোর দিয়ে বলেন, পুরুষেরা বেশিরভাগ
সময় কাজ কর্মে গৃহের বাইরে থাকে। সেজন্য তারা সন্তানদের পড়াশুনার দিকে লক্ষ্য দিতে
পারে না। সেজন্য নারী শিক্ষার একান্ত প্রয়োজন। (তথ্য সূত্রঃ- ক্যুইজ
অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ১৮/১৯)
তিনি তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নাজিমুদ্দিন খানের নিকল অবৈতনিক প্রাথমিক বালিকা
বিদ্যালয় স্থাপন করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিধান পরিষদে বিপুল ভোটে উক্ত বিলটি পাশ
হয়।
যোগেন্দ্রনাথে চেষ্টার ফলে নাজিমুদ্দিন সাহেবের মন্ত্রীসভায় তপশিলি ছাত্র-ছাত্রীদের
শিক্ষার জন্য ৮ম শ্রেণির পরিবর্তে ৪র্থ শ্রেণি থেকেই অনুদানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
নিরক্ষরতা দূরীকরণের পরিকল্পনায় যোগেন্দ্রনাথের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
ভারত দরিদ্র দেশ, সেজন্য সরকারী অর্থ যাতে সাশ্রয় করা যায় সেদিকে তিনি লক্ষ্য দিলেন।
তিনি ছাত্র সমাজকে প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা দেবার ব্যবস্থা করেন।
এই সময় ছাত্র সমাজে এক নবী উৎসাহের সঞ্চার হয়েছিল। (তথ্য
সূত্রঃ- ক্যুইজ অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ১৯)
১৯৪৪ সালে যোগেন্দ্রনাথের নেতৃত্বে বরিশালে সন্তোষকুমারী তালুকদারের নেতৃত্বে
একটি মহিলা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় যোগেন্দ্রনাথ বলেছিলেন, মায়েরাই শিশুদের প্রথম
শিক্ষায়ীত্রী। তাই তপশিলি সমাজাকে শিক্ষিত করতে হলে নারী সমাজকে আগে শিক্ষাদান করা
দরকার। প্রতিটি পরিবারের মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে হবে। (তথ্য
সূত্রঃ- ক্যুইজ অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ২২)
যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের মন্ত্রীত্বকালে তপশিলি ছাত্ররা সরকারী বৃত্তি লাভ করে
বিদেশে উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ পেয়েছিল। এইসব ছাত্রদের মধ্যে একজন ছিল গোপালগঞ্জের
কুমুদবন্ধু মজুমদার। তিনি আমিরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা বিষয়ে উচ্চশিক্ষা
লাগের সুযোগ পান। আমেরিকা যাওয়ার জন্য তাঁর কিছু অর্থের অভাব ঘটে। তিনি তখন যোগেন্দ্রনাথের
কাছে সাহায্য চান। তিনি বলেন ফিরে এসে চাকরি পাওয়ার পর এই টাকা পরিশোধ করবেন। যোগেন্দ্রনাথ
তাঁকে ৭৫০ টাকার একটি চেক লিখে দেন।
কুমুদবন্ধু উচ্চশিক্ষা লাভ করে ফিরে এসে বাংলার সরকারের শিক্ষা দপ্তরে উচ্চপদে
চাকরি করেন। কিন্তু যোগেন্দ্রনাথের ঋণ পরিশোধের কথা কখনো মনে করেননি।
পরবর্তীকালে যোগেন্দ্রনাথ আর্থিক অনটনে যখন কাল কাটাচ্ছিলেন, তখন তিনি কুমুদবাবুকে
তাঁর ঋণের কথা স্মরণ করিয়ে দেন এবং মাসে অন্ততঃ ৫০ টাকা করে পরিষোধ করার প্রস্তাব দিয়ে
পত্র দেন। কিন্তু কুমুদবাবু সেই পত্রের জবাব দেওয়ার মতো সৌজন্যবোধটুকুও দেখাননি। এই
ধরনের নেমকহারাম ব্যক্তির সংখ্যা তপশিলি সমাজে নিতান্ত কম নয়। (তথ্য
সূত্রঃ- ক্যুইজ অন- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, পৃ ২২)
Comments
Post a Comment