Skip to main content

‘মতুয়া পতাকা’র আদর্শ ও বিকৃত করণ লেখক-জগদীশচন্দ্র রায়




‘মতুয়া পতাকা’র আদর্শ ও বিকৃত করণ

লেখক-জগদীশচন্দ্র রায় (মুম্বাই) 

    কোনো দেশের পতাকা যেমন জাতীয় গৌরব। তেমনি কোনো সমাজ, ধৰ্ম, সংগঠন ইত্যাদিরও   সম্মানের প্রতীক
পতাকা। মতুয়াধর্মের পতাকা ত্রিকোণ, মাঝখানে গাড় লাল পাশে সাদা
বেড়িএই তিন কোণ হচ্ছে- সত্য, প্রেম ও পবিত্রতার প্রতীক। পতাকার মাঝখানে আছে গাড় লাল। যেটা   বিপ্লবের প্রতীক। আর পাশের সাদা বেড়ি হচ্ছে-শান্তির প্রতীক। অর্থাৎ বিপ্লব করতে হবে তবে উগ্র নয় শান্তিপূর্ণ অবস্থায়। তাই মতুয়াধর্ম শুধুমাত্র একটা ধর্ম নয়। এটা একটা আন্দোলন বা বিপ্লবের দিশা নির্দেশ। প্রশ্ন আসে কোন দিশা? কিসের বিরুদ্ধে আন্দোলন বা বিপ্লব? সেটা  হচ্ছে- সুন্দর সমাজ গঠনের দিশা। সমাজে শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞানের আলোর বিস্তার ঘটানোর আন্দোলনকুসংস্কার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আন্দোলন দেশ ও সমাজের প্রগতির দিশা  দেখানো একটা মানুষ, কিভাবে সুখে শান্তিতে জীবন ব্যতীত করতে পারে তার দিশা নির্দেশ।      আত্মগরিমাকে  প্রস্ফুটি করার আহ্বানআত্মসম্মানকে সবসময় অগ্রাধিকার দেওয়া। সেটা  কেমন?  
 থাক ধর্ম্ম যাক জান       রাখিতে ধর্ম্মের মান
           মোরা সবে করি যে প্রতিজ্ঞা।
যা ইচ্ছা করুক রাজা        যাহা ইচ্ছা দিক সাজা
            তবু নাহি মানিব এ আজ্ঞা।।
যদি মোরা রাখি ধর্ম্ম         মোদেরে রাখিবে ধর্ম্ম।
আবার আছে-
ধর্ম্মকে সহায় করি       সবে রাজধানী ছাড়ি
           নিজে নড়ে ধর্ম্মকে না নাড়ে।  (গু.চ. পৃ.৩০)
    কিন্তু আমরা এ কি দেখছি? কেন এতো বিকৃত করণ? এই পোষ্টের সঙ্গে প্রমাণ হিসাবে কয়েকটি ছবি তুলে ধরছি। সেখানে দেখা যাচ্ছে- কোনোটাতে বেড়ি হলুদ রঙের। আবার কোনটাতে বেড়ি নেই, শুধুমাত্র লাল পতাকা। আবার লালটাও কোথাও কমলা, গাড় লাল নয়। কোনোটাতে ভীতরটা সাদা আর বেড়ি লাল, অর্থাৎ পুরো উল্টাএই ধরণে অনেক নিদর্শন দেখতে পাচ্ছি।  এসব দেখে মনে হচ্ছে- এই ভক্তরা হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরকে মানেন। কিন্তু তাঁদের ধর্মদর্শন ও আদর্শ সম্পর্কে জানেন না। অথবা এই ভক্তরা অন্যের দ্বারা প্রভাবিত। তাই নিজের আত্মমর্যাদাকে ধুলায় লুন্ঠিত হতে দিচ্ছেন। শুধু ভক্তরা নয়; অনেক নামধারীরাও এর সঙ্গে যুক্ত আছেন বলে মনে হয়।  
এবার প্রশ্ন আসে পতাকার দৈর্ঘ ও প্রস্ত কতটা হবে?
    পতাকার দৈর্ঘ সম্পর্কে সঠিক পরিমাপের তথ্য আমার জানা নেই। তবে সাধারণত যেটা মনে  হয় বিভিন্ন পতাকা দেখে, সেটা হচ্ছে- ৪:৩অর্থাৎ দৈর্ঘ ৪ হলে প্রস্ত ৩ হবে। দৈর্ঘ ৪ ও প্রস্থ ৩   এমন একটা গাড় লাল কাপড়ের লম্বা কোণাকুণি করে কেটে নিতে হবে। আর পাশে সাদা কাপড়ের বেড়ি লাগাতে হবে। (এ সম্পর্কে আরো তথ্য কারো জানা থাকলে অবশ্যই জানাবেন)

এই বিকৃত করণের পরিণতি কি হতে পারে?     
     যাঁরা মতুয়াধর্ম দর্শনকে সঠিক দিশায় এগিয়ে নিয়ে যেতে চান, তাঁদের উদ্দেশে জানাই- এখনই এই বিষয়ে সকলের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা দরকার। যাঁরা জানেন না তাঁদের সঠিক কথা জানানো দরকার। আর যাঁর জেনে বুঝে ও অন্যের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে করছেন, তাঁদের এই বিকৃতকরণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করা দরকার। সেই প্রতিবাদ স্বরূপই আমার এই পদক্ষেপ। এই বিকৃতকরণ চলতে থাকলে কিন্তু একদিন মতুয়া নামটা থাকবে ধর্ম, দর্শন ও আদর্শ বলে কিছু থাকবে না। যেমন ঘটেছিল বৌদ্ধ ধম্মের ক্ষেত্রে। আর একটা কথা এই বিকৃত করণ শুধু পতাকায় নয়, বিভিন্ন তথ্যেরও বিকৃত করণ ঘটছে, সেটার প্রতি দৃষ্টি রেখে সঠিক তথ্য পরিবেষণ করা দরকার। আর যারা ইচ্ছা কৃত তথ্যের বিকৃত করছে তাদের প্রতি তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তোলা দরকার।

জয় হরিচাঁদ। জয় গুরুচাঁদ।   


নিচের প্রথম ফটোটি সঠিক বলে আমার অভিমত। বাকি সব বিকৃত। 








Comments

  1. জয় হরিচাঁদ জয় গুরুচাঁদ 🚩🚩🚩🚩
    ধন্যবাদ

    ReplyDelete

Post a Comment