Skip to main content

গুরুচাঁদ ঠাকুর ও কালীপূজা - লেখক জগদীশচন্দ্র রায়
















গুরুচাদঁ ঠাকুর কর্তৃক লক্ষ্মীখালীতে কালীপূজা হয়েছিল? নাকি  কালীপূজার দিনে “ঠাকুর উৎসব” বা জাগরণী সভা হয়েছিল?
জগদীশচন্দ্র রায়(মুম্বাই) roy.1472@gmail.com

    প্রায়ই শুন্‌তে পাই , গুরুচাঁদ ঠাকুর লক্ষ্মীখালীতে কালী পূজা চালু করেছিলেন। সেটা এখনও প্রতি বছর হয়। তাহলে দেখা যাক, “শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ চরিত” অনুসারে কি বর্ণনা আমরা পাই। আর সেখানে বাস্তবে কি হয়েছিল এবং বর্তমানে কি হয় তার অনুসন্ধানে ব্রতী হওয়া যাক। 
গুরুচাঁদ চরিতে বিষয়ের নামকরণ করা হয়েছে- শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ কর্ত্তৃক লক্ষ্মীখালীতে কালীপূজা (পৃঃ ৫২৬) গুরুচাঁদ ঠাকুর লক্ষ্মীখালীতে বিভিন্ন ভক্তদের বাড়িতে যান। তিনি যেদিন গোপাল সাধু ও কাঞ্চন মাতার বাড়িতে সকাল বেলা উপস্থিত হন; সেদিন ছিল কালীপূজার দিন। তাই, ঠাকুর বলেন-
“মোর মনে এই ইচ্ছা হয়েছে গোপাল।
আয়োজন কর তাই সকাল সকাল।।
আমরাও কালীপূজা করিব আজিকে।
আমাদের পূজা মাতা নিবেন পুলকে।।” (শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ চরিত পৃঃ ৫২৬)
ঠাকুরের কথা শুনে সকলে খুব আনন্দ পায়। কিন্তু –
কাঞ্চন জননী তা’তে তুলিলেন দ্বন্দ্ব।
   মাতা কয় “এই কার্য মনে নাহি লয়।।
মতো’ বাড়ী অন্য পূজা কবে কোথা’ হয়?” (পৃঃ ঐ)
তারপর মাতা কাঞ্চন ( গোপাল সাধুর জীবন সঙ্গী) আরো বলেন-
“কিন্তু কালীপূজা মোরা কিছুতে না করি।
আমরা পুজিব মাত্র গুরুচাঁদ হরি।।”
জননীর কথা শুনে দ্বিগুণ আনন্দ।
কাটিলা জননী তবে ভক্ত-মন-সন্দ।। (পৃঃ ৫২৭)

   একটা বিষয় পাঠকগণ লক্ষ্য করুণ, কবির বর্ণনানুসারে আমরা দেখতে পাচ্ছি- গুরুচাঁদ ঠাকুর কালীপূজা করার নির্দেশ দিলে একমাত্র মাতা কাঞ্চন জানাচ্ছেন,- “একথা আমি মেনে নিতে  পারছিনা। মতুয়াদের বাড়িতে আবার কোন দিন অন্য পূজা হয়েছে নাকি?” তাই তিনি বলেন, যে,   “কালীপূজা আমরা কিছুতেই করব না। আমরা শুধু পূজা করব হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরকে।” কাঞ্চন মাতার এই যুক্তি শুনে সকলে দ্বিগুণ আনন্দ করে। আর ভক্তদের মনের সন্দেহ দূর হয়।  
    এখানে দুটো বৈপরিত্য ঘটছে। গুরুচাঁদ ঠাকুর বললেন কালীপূজা করতে। আর কাঞ্চন মাতা বললেন- সেটা কিছুতেই করা সম্ভব নয়। এটা মতুয়াদের বাড়িতে হয়না। মতুয়ারা শুধু হরি-গুরুচাঁদের পূজা করে।
     তাহলে কি আমরা এটা ধরে নেব যে, গুরুচাঁদ ঠাকুর যে কালীপূজার দিনে কালীপূজা করতে বলছেন, আসলে সেটা কালীপূজা কিছুতেই নয়। তিনি ভক্তদেরকে পরীক্ষা করছেন মতুয়া ধর্ম দর্শনের প্রতি তাদের আস্থা কতটা গভীর? দ্বিতীয় আর একটি কথাও আমরা ভাবতে পারি সেটা হচ্ছে, আমরা কোনো দেব-দেবীর পূজার সময় যদি বলি- ‘মতুয়াদের এ সব করা ঠিক নয়।’ তখন কেউ কেউ বলেন, ‘তাহলে এর কিছু বিকল্প দরকার। বিকল্প না পেলে তো মানুষ ঐ দেব-দেবী বা ব্রাহ্মণ্যবাদী আকর্ষণে আকৃষ্ট হবে।’ তাহলে আমরা ভাবতে পারি না কি, গুরুচাঁদ ঠাকুর কালীপূজার দিনে বিকল্প  ব্যবস্থা করলেন।
(এখানে পাঠকগণের জ্ঞাতার্থে জানাই, যেটা এই লেখা লিখতে গিয়ে বিস্বস্ত সূত্রে জানলাম যে, সেই সময় অর্থাৎ (১৩২৫ বঙ্গাব্দের ৯ ই কার্তিক/১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ অক্টোবর, বরিবার ছিল চিত্রা নক্ষত্র, অমাবস্যা তিথি। সূত্র- “শ্রীশ্রী গোপালচাঁদ চরিত্র সুধা”- সম্পাদক – ডাঃ সুধাংশু শেখর মালাকার। পৃঃ ৩৯৩) লক্ষ্মীখালীতে জমিদার বঙ্কিমচন্দ্র শিকারী (বর্তমানে তাঁরা সরকার) এর   বাড়িতে প্রতিবছর কালীপূজা হতো। তিনি নমঃ হলেও মতুয়া নন। তাই মতুয়াদের তিনি ভালোচোখে দেখতেন না। আর তাঁর বাড়িতে মতুয়াদের প্রবেশাধীকার ছিলনা কালীপূজাতে। এটা গুরুচাঁদ ঠাকুর জানতে ও বুঝতে পেরে তিনি বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে কালীপূজার দিনে “ঠাকুর উৎসব” এর সূত্রপাত করেন। যেটা এখনো অব্যাহত। ওখানের মতুয়ারা কোনো কালীপূজা করেন  না। এমনকি গোপালচাঁদের বংশধরেরা হরি-গুরুচাঁদ ভিন্ন অন্য কোনো দেব-দেবীর পূজা করেননা।)   
 তারপর-
সন্ধ্যাকালে হ’ল মহা নাম সংকীর্ত্তন।
আনন্দে মতুয়া সব করিল নর্ত্তন।। (পৃঃ ৫২৭)
সন্ধ্যার সময় পূজা শুরু হ’ল। কিন্তু কিভাবে? মহা নাম সংকীর্ত্তন করে। যে নাম সংকীর্ত্তনে প্রায় পাচঁ হাজার ভক্তের সমাগম হয়। এবং এইভাবে নাম সংকীর্ত্তন করে সকলে খুব আনন্দ উপভোগ করে। তারপর-
এদিকে দয়াল প্রভু মন্দিরে বসিল।
আলোকে ঝলকে যে যামিনী হাসিল।। (পৃঃ ৫২৭)
তাহলে আমরা কি দেখতে পাচ্ছি? মাটির কালী প্রতিমা কিন্তু মন্দিরে স্থাপন করা হয়নি। সেখানে গুরুচাঁদ ঠাকুর নিজেই মন্দিরে গিয়ে বসেন।
    কবির কথা অনুসারে আমরা দেখতে পাই, ঠাকুর পুরাণ  কথা ভক্তগণকে বলছেন। কিন্তু সেই পুরাণ কথা কি হ’তে পারে? এখানে কিন্তু বিদগ্ধ পাঠকগণকে ভাবতে হবে। এখানে কবির দেওয়া বৈদিক বর্ণনাকে মেনে নেবেন? না কি গুরুচাঁদ ঠাকুরের জীবনাদর্শ ও কর্ম থেকে আমরা যেটা যুক্তিতে পাই সেটা? আমরা যেটা যুক্তিতে পাই সেটা হচ্ছে যে, তিনি ভক্তগণকে পৌরাণিক কাহিনি শুনিয়েছেন এমনভাবে যে ভক্তগণ বুঝবেন ওসব কাহিনি ব্রাহ্মণ্যবাদীদের সুবিধার জন্যই তৈরী করেছে। তাই ভক্তগনকে ভক্তির মধ্যে মুক্তি খুজলে চলবেনা। তাদের সন্তানদেরকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে পারলেই মুক্তি আসবে। যাইহোক, মন্দিরে বসে গুরুচাঁদ ঠাকুর ভক্তগণের উদ্দেশ্যে সুদীর্ঘ আলোচনা করার পর-
প্রভু যবে করিলেন বাক্য সমাপন।
কাঞ্চন জননী পূজা করিল তখন।।
চরণ বরণ করি দুর্ব্বাদল দিল।
ধান্য-দুর্ব্বা এক সঙ্গে শিরেতে রাখিল।।
নয়নের জলে দেবী বয়ান ভাসায়।
‘বাবা’ ‘বাবা’ বলে আর কিছু নাহি কয়।। (পৃঃ ৫২৮)
মাতা কাঞ্চনের পূজা সমাপ্ত হলে গুরুচাঁদ ঠাকুর গোপালকে ডেকে বলেন-
“এই পূজা ক’রো তুমি প্রত্যেক বছরে।”
তদবধি লক্ষ্মীখালী কালীপূজা দিনে।
“ঠাকুর উৎসব” করে মিলি ভক্তগণে।। (পৃঃ ৫২৮)

     আমরা কি দেখতে পাচ্ছি? কালীপূজার দিনে এইভাবে এক মহাজাগরণী উৎসব হয়। যে উতসবের নাম “ঠাকুর উৎসব”। যেটা করতে গুরুচাঁদ ঠাকুর নিজে নির্দেশ দিয়েছেন। আর সেই  থেকে কালীপূজার দিনে এই “ঠাকুর উৎসব” হয়ে আসছে। 
 
   আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কালীপূজা কোথায় হোল?  কালীপূজার দিনে একটা বিকল্প মতুয়া উৎসব হোল। যার নাম ‘ঠাকুর উৎসব’কিন্তু তবুও আমরা শুনতে পাই গুরুচাঁদ ঠাকুর নিজেই লক্ষ্মীখালীতে কালীপূজা করিয়েছিলেন।
    আশাকরি, এই লেখা থেকে পাঠকগণ বিষয় সম্পর্কে সঠিক ধারণার রসদ পেলেন, গুরুচাঁদ ঠাকুর কালীপূজার রাত্রে ‘ঠাকুর উৎসব’ অর্থাৎ নাম সংকীর্ত্তন ও আলোচনা বা জাগরণী উৎসব করতে নির্দেশ দিয়েছেন সকল মতুয়া অনুরাগীদের।
দ্বিতীয় পর্বঃ-
লেখাটি এখানেই শেষ করা যেত। কিন্তু ঘোলের মজা থাকে তলে। তাই পাঠকদের  অনুরোধ  করবো তল পর্যন্ত প্রবেশ করতে। এখানে আপনারা খুঁজে পাবেন গুরুচাঁদ ঠাকুর ঘরে ঘরে মন্দির স্থাপন করে ঈশ্বরের স্থাপন করতে বলেছেন। কিন্তু কোন ঈশ্বর? তাঁর মতে ঈশ্বর কাকে বলা হয়েছে। আর পূজাই বা কার করতে বলেছেন তিনি।

     এই ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ অক্টোবর, গুরুচাঁদ ঠাকুরের উপস্থিতিতে  লক্ষ্মীখালীতে  বিভিন্ন জ্ঞানী-গুণীজনদের নিয়ে এক বিরাট জাগরণী সভা হয়। সেই সভায় –
প্রভু বলে “শোন সবে নমঃশূদ্রগণ।
ধর্ম্ম শক্তি বিনা জাতি জাগেনা কখন।। (পৃঃ ৫২৯)
তিনি নমঃশূদ্রদের জানান, জাতিকে জাগাতে হলে ধর্ম্মের শক্তির দরকার আছে। এই শক্তির মাধ্যমেই মানুষকে একতাবদ্ধ করা যাবে। এরপর তিনি জানান যে, এই জাতির মঙ্গলের জন্য যা  কিছু হয়েছে সবই হরিচাঁদ ঠাকুরের অবদান। আর তিনি যে কাজের দায়িত্ব আমাকে সমর্পন করেগেছেন সেই কাজই আমি প্রতিনিয়ত করে চলেছি। তাই আপনাদের প্রধান কাজ হচ্ছে-
বিদ্যা ছাড়া এ জাতির দুঃখ নাহি যা’বে।
গ্রামে গ্রামে পাঠশালা কর তাই সবে।।
বালক বালিকা দোঁহে পাঠশালে দাও।
লোকে বলে “মা’র গুণে ভাল হয় ছা’ও।। (পৃঃ ৫২৯)
তিনি সকলকে জাতির দুঃখ দূর করার জন্য বিদ্যা অর্জনের উপর জোর দেন।   আর গ্রামে গ্রামে  পাঠশালা করার আহ্বান জানান। নারীকেও শিক্ষিত হওয়ার কথা বলেন। কারণ, মা’ শিক্ষিত হলে সন্তানও শিক্ষিত হবে। তিনি আরো জানান, শুধু শিক্ষা অর্জনই নয়; তোমাদের ব্যবসা- বানিজ্যের ক্ষেত্রেও এগিয়ে যেতে হবে। আর-
 “কৃষিকার্যে কভু কেহ করিওনা হেলা।
মদ গাঁজা খেয়োনারে ছাড় জুয়া খেলা।। (পৃঃ ৫২৯)
তোমরা “মিথ্যা কথা বলিও না করিও না চুরি।”  তোমরা ব্যভিচারী হইওনা। এসব করলে তোমাদের “ধন মান সব যা’বে হবে মহাকষ্ট।”

     এরপর গুরুচাঁদ ঠাকুর জানান যে, মতুয়াদেরকে কাঁর পূজা করতে হবে আর কার পূজা   করবেনাসে  বিষয়ে এক অমোঘ বাণী দেন। যে বাণীকে প্রত্যেক মতুয়া অনুরাগীদের ভেবে দেখা দরকার।

দেবতা-মন্দির সবে গড়’ ঘরে ঘরে।
নিত্য পূজা কর সেথা সরল অন্তরে।।
এইখানে আমি বলি’ এক সমাচার।
দেবতা-মন্দিরে পূজা করিবে কাহার?
বিশ্বভরে এই নীতি দেখি পরস্পর।
যে যা’রে উদ্ধার করে সে তার ঈশ্বর।। (পৃঃ ৫২৯)

   পাঠকগণ খুব গভীরভাবে লক্ষ্য করুণ, গুরুচাঁদ ঠাকুর ঘরে ঘরে দেবতার মন্দির গড়ার কথা বলছেন। কিন্তু তিনি আবার প্রশ্ন করছেন যে, সেই মন্দিরে কাঁর পূজা করা হবে? তিনি নিজের  প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে দৃপ্তকন্ঠে এক অমোঘ নির্দেশ দিয়েছেন যে, এই মন্দিরে এমন ঈশ্বরকে স্থাপন করে পূজা করবে, যে ঈশ্বর সারা বিশ্বময় বিরাজ করছে। যে ঈশ্বর মানুষকে তাদের প্রতি অন্যায়, অত্যাচার, সামাজিক ধর্মীয় বিষয়ে জাতিভেদ ও সমস্ত অসমানতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠে সংগ্রাম করেছেন। এইসব সমস্যা থেকে পিড়ীতদের উদ্ধার করেছেন। সেই ঈশ্বরের পূজা করতে হবে।
তোমাদের এই কুলে হরি অবতার।
দয়া করে নমঃশূদ্রে করিল উদ্ধার।।
তাঁর পূজা কর সবে তাঁর ভক্ত হও।
নিজ ঘরে ভগবান ফেলে কোথা যাও? (পৃঃ ৫২৯)  

     তোমাদের ঈশ্বর বা অবতার যা-ই বলোনা কেন, তিনি হচ্ছেন হরিচাঁদ ঠকুর। তিনিই তোমাদের উদ্ধার কর্তা। তাই তোমরা তাঁর পূজা কর। তোমরা তোমাদের নিজের ঘরের ভগবানকে ফেলে রেখে অন্য কোথায় যেতে চাইছো? তিনি আরো নির্দেশ দেন যে,-
বাল্যকালে পুত্র কন্যা বিয়া নাহি দিবে।
পথ ঘাট ঘর দ্বার পবিত্র রাখিবে।।
বিবাহ শ্রাদ্ধেতে সবে কর ব্যয় হ্রাস।
শক্তির চালনা সবে রাখ বার মাস।।
আত্মরক্ষা শক্তি সবে অবশ্য রাখিবে।
অগ্রভাগে কভু কা’রে আঘাত না দিবে।।
বিদ্যার কারণে দান দানের প্রধান।
বিদ্যাহীন নর দেখ পশুর সমান।। (পৃঃ ৫২৯/৫৩০)

সন্তানদের তোমরা বাল্যকালে বিবাহ দেবেনা। পথ ঘাট ঘর দ্বার সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন  রাখবে। পাঠকগণ দেখুন, গুরুচাঁদ ঠাকুর আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর পূর্বে স্বচ্ছতার অভিযান চালিয়েছিলেন। আর প্রায় শত বর্ষ পরে সরকার সেটা করার কথা বলছেন! এর পর ঠাকুর বলছেন যে, নারীদের সব সময় মর্য্যাদা দিতে হবে। অলসতা ত্যাগ করতে হবে। আর বিবাহ বা  শ্রদ্ধা কাজে খরচ কম করতে হবে। ঘর সংসার চালানোর জন্য সব সময় রসদ মজুদ রাখতে  হবে। আত্মরক্ষার জন্য ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। তবে ‘অগ্রভাগে কভু কা’রে আঘাত না দিবে।’ আর আমাদের সকল পরিবার হচ্ছে কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। তাই হাল, গরু বা কৃষি কাজের উপকরণ সবসময় চালু রাখতে হবে। তোমরা সকলে উচচ শিক্ষায় শিক্ষিত হও। “মোরা নাহি হব গোলামের জাতি।” অর্থাৎ আমরা আর গোলাম হয়ে থাকবো না। গোলামী থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এসব কাজ তোমাদের মেনে চলতে হবে। আর একটা কথা দেশের শাসন যন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ না করলে সে সম্পর্কে সঠিক ধারণার উন্মেষ ঘটে না। তাই “রাজ কার্যে ভাগি থাকা চাই।” অর্থাৎ রাজ কাজের অংশীদার হতে হবে।
   এইভাবে জাতির জাগরণের জন্য গুরুচাঁদ ঠাকুর তাঁর উপদেশ, নির্দেশ ও বাণী দিয়ে তাঁর বক্তব্য সমাপ্ত করেন। ঠাকুরের বক্তব্য শুনে সভার লোকেরা খুশি হয়ে ও আনন্দে ঠাকুরের জয়ধ্বনি দিতে থাকেন।  
                               _________________________


  




Comments