ভয়ঙ্কর মতুয়া ও ব্রাত্য
মতুয়া
লেখক- প্রদীপ কুমার
বিশ্বাস
হরিচাঁদ ঠাকুরের সমাজ
দর্শনের বাস্তবতা ও গভীরতা অন্বেষণ করিতে গিয়া মতুয়া কাহারা তাহা মর্মে মর্মে উপললব্ধি
করিলাম। সেই ভয়ঙ্কর মতুয়াদের সারনিকা তুলিয়া ধরিলাম।
· যাহারা মতুয়া নিশান
ঊড়িয়ে কাঁসর ডঙ্কা বাজিয়ে পথ চলিতে চলিতে বৈদিক দেব-দেবীর মন্দির দেখিলে নিশানকে
বিশ্রাম দিয়ে বাদ্য-বাজনা থামিয়ে হরিচাঁদ, হরিবোল ভুলিয়া গিয়া ঐ বৈদিক মন্দিরে
মাথা ঠুকিয়া গড়াগড়ি খান; তাহারাই মতুয়া।
· যাহারা মতুয়া সাধু
সাজিবার জন্য যতরকমের মালা আছে তাহা গলায় পরিধান করিয়া হরিচাঁদ শান্তিমাতার নাম
করিয়া শিষ্য-শিষ্যা বানাইয়া তাদের কর্ণে কৃষ্ণমন্ত্র দিয়া হরিচাঁদ ঠাকুরকে অপমান
করেন; তাহারাই মতুয়া।
· যাহারা হরিমন্দির তৈরি
করিয়া মন্দিরের মধ্যে হরিচাঁদ শান্তিমাতার মূর্তি বসাইয়া মন্দিরের বহিঃরঙ্গে
“হরেকৃষ্ণ” নাম লিখিয়া বৈদিক দেব-দেবীর
ছবি দিয়া হরিচাঁদ ঠাকুরের মহান দর্শনকে বিসর্জণ দিতেছেন; তাহারাই মতুয়া।
· যাহারা পিতা-মাতার
প্রতি কর্তব্য পালন না করিয়া, হরিচাঁদ ঠাকুরের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুল, কাঁচকলা
দেখাইয়া বৈদিক তীর্থধামে বিহার করিয়া ব্রাহ্মণদের ব্যাংক ব্যালান্স বৃদ্ধি
করিতেছেন; তাহারাই মতুয়া।
· যাহারা হরিচাঁদ ঠাকুরের
নির্দেশিত হরিবাসরে অবস্থান করিয়া জিহ্বা প্রদর্শনরতা বস্ত্রহীনা বৈদিক দেবীর জোড়
পুজার নিষ্ফল মানত করিয়া, পরবর্তীতে যে আয়োজন করিয়া হরিচাঁদ ঠাকুর ও মতুয়া দর্শনকে
চ্যালেঞ্জ জানাইতেছেন; তাহারাই মতুয়া।
· যাহারা সন্তানের পরীক্ষার
সময়কালে বিদ্যা প্রহরারতার সঙ্গে বৈদিক বিভিন্ন দেব-দেবীর তুষ্ঠতায় মাতিয়া ওঠে; কিন্তু হরিচাঁদ পুত্র
শিক্ষাগুরু গুরুচাঁদ ঠাকুরের কথা স্মরণ করিবার প্রয়োজনবোধ করেন না; তাহারাই মতুয়া।
· যাহাদের গৌতমবুদ্ধ,
আম্বদেকর, যোগেন মন্ডলের প্রতিকৃতি দেখিলে চোখে ভয়ঙ্কর এলার্জি হয়, ছানি পড়ে তাহারা
মুখে হরেকৃষ্ণ, জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়া গৌতমবুদ্ধ, আম্বদেকর, যোগেন মন্ডলের
নামে উচ্চমানের নিষিদ্ধ শব্দবান প্রয়োগ করিয়া আত্মতৃপ্তি পান; তাহারাই মতুয়া।
· যাহারা কৃষ্ণনাম,
রামনাম আরও বৈদিক ক্রিয়াকর্ম ভালবাসিবার ফলে কোরান হাদিসের শক্তির নিকট পরাজিত
হইয়া জন্মভূমি ছাড়িতে বাধ্য হইয়া বেনাগরিক সাজিয়াছেন; কিন্তু তাহারা বৈদিক বিধান
পালন করিয়া চলিয়াছেন; তাহারাই মতুয়া।
· যাহারা হরিচাঁদ
গুরুচাঁদের দর্শন পদদলন করিয়া মুখে হরিব্বোল বলিয়া শিরে মনুসংহিতার বিধান বহন
করিয়া নিজেরাই দাসত্ব করিবার জন্য জীবনপন করিয়াছেন; তাহারাই মতুয়া।
· যাহারা গুরুচাঁদ
ঠাকুরের শিক্ষা আন্দোলনের জন্য লেখাপড়ার সুজোগ পাইয়া স্যুট-বুট- টাইয়ে সজ্জিত হইয়া পকেটের কলমটির গুরুত্ব না
বুঝিয়া ব্রাহ্মণ্যবাদীর পদলেহনে ব্যস্ত থাকিবার জন্য গুরুচাঁদ ঠাকুর এবং নিজের
আত্মপরিচয় ভুলিয়া আগামীদিনের গোলামে পরিণত হইবার জন্য সদা ব্যস্ত; তাহারাই মুতুয়া।
· প্রকৃত সত্য দর্শনে
বিশ্বাসী কতিপয় মতুয়া; গৌতমবুদ্ধ, হরিচাঁদ ঠাকু্ গুরুচাঁদ ঠাকুর, আম্বেদকর, যোগেন
মন্ডলের কল্যাণকারী বাস্তব দর্শনকে একত্রিত করিয়া জীবন চলার শপথ গ্রহণ করিয়াছেন। ঐসব মহান মনীষীদের নাম
একত্রে যাহারা বলেন; ভয়ঙ্কর মতুয়াগণ
তাহাদের শিরচ্ছেদ কামনা করিয়া অস্টনাম করিতেছেন।
· যাহারা পিতা-মাতা,
গুরুজন প্রয়াত হইলে ব্রাহ্মণ বর্জিত
শ্রদ্ধাবাসর বা স্মরণ সভা করিতেছেন;
সমস্ত রকম পুজাপার্বন বর্জন করিয়াছেন, সেই সব কতিপয় মতুয়াগণ ব্রাত্য মতুয়া বা
ভয়ঙ্কর মতুয়াদের নিকট দুষ্টু মতুয়া নামে পরিচিত।
_______________________________
Comments
Post a Comment